Lalon Shah মাজার

লালন শাহের মাজার

ফকির লালন শাহের মাজার- কুষ্টিয়া ভ্রমণে আসলে আপনার প্রথমেই যে যায়গাটির কথা মনে হবে সেটি হচ্ছে বাউল সাধক ফকির লালন শাহের মাজার বা লালন আখড়া বা লালন আখড়া বাড়ী। লালন শাহের মাজার কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার চাপড়া ইউনিয়নে অবস্থিত হলেও কুষ্টিয়া শহরের একেবারে পাশে। কুষ্টিয়া শহর ও লালন শাহের মাজারের মধ্যে মৃতপ্রায় কালি গঙ্গা নদী অবস্থিত যা একটি মিনি কালভাট দিয়ে উভয় পাড়ে সংযুক্ত।

বাউল সম্রাট লালন শাহ কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁওড়িয়া গ্রামে একটি আখড়া গোড়ে তোলেন যেখানে শিস্যদের নীতি ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা দিতেন। প্রতি শীতকালে আখড়াতে ভান্ডারা নামে একটি উৎসব আয়োজন করতেন। দূর দুরান্ত হতে শিস্যরা সেই উৎসবে সমাবেত হতেন। সেখানে আধ্যাত্মিক আলোচনার পাশাপাশি লালন তার নিজের লেখা গান পরিবেশন করতেন, শিস্যরাও গুরুর বিভিন্ন গান পরিবেশন করতেন।

১২৯৭ বঙ্গাব্দের ১লা কার্তিক (১৮৯০ সালের ১৭ আক্টোবর) ছেউড়িয়ার নিজ আখড়ায় লালন মৃত্যুবরণ করেন। তার উপদেশ অনুসারে আখড়ার একটি ঘরের ভিতর তার কবর দেওয়া হয়।

১৯৬৩ সালে ছেঁউড়িয়ায় আখড়া বাড়িতে বর্তমান মাজারটি নির্মান করা হয় যার নাম হয় লালন লোকসাহিত্য কেন্দ্র । ১৯৭৮ সালে লালন লোকসাহিত্য কেন্দ্র নাম পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠিত হয় লালন একাডেমী। ২০০৪ সালে লালনএকাডেমী চত্বরে আধুনিক মানের অডিটোরিয়াম ও একাডেমি ভবন নির্মাণ করা হয়।

প্রতি বছর দোল পূর্ণিমায় দোল উৎসব ও লালনের মৃত্যুদিবসে এখানে লালন স্বরণ উৎসব হয়ে থাকে। দেশ বিদেশ হতে জড় হন বহু লালন ভক্ত ও সাধারণ মানুষ। এ সময় তাঁর শিষ্যরা লালনের গান গেয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন।

লালন মাজারের কেন্দ্রভাগে লালন ও তার বিশিষ্ট শির্ষদের কয়েকজনের কবর কেন্দ্রীক মূল মাজার কমপ্লেক্স তৈরী হয়েছে। মাজার কমপ্লেক্স এর পাশে একটি ৪ তলা ভবনে লালন জাদুঘর, সঙ্গীত বিদ্যালয় ও একাডেমির অফিস কক্ষ। পাশে তৈরী হয়েছে আধুনিক অডিটোরিয়াম যার নিচে ফাঁকা যায়গায় সারা বছরই দূর দূরান্ত হতে আগত ভক্তবৃন্দ অবস্থান করেন। মাজারের ‍পশ্চিম দিকে মরা কালিগঙ্গা নদী তীরে স্বরণউৎসব করার জন্য উন্মুক্ত মঞ্চ, মেলার মাঠ ও আগতদের গোসলের জন্য ঘাট বাঁধানো বিশাল দিঘী খনন করা হয়েছে। মাজার ও অনুষ্ঠান মাঠের বিভিন্ন স্থানে লালনের বেশ কয়েকটি ভাস্কর্য তৈরী করা হয়েছে।

কিভাবে লালন শাহের মাজার যাবেন?

কুষ্টিয়া বড়বাজার থেকে লালন আখড়া পর্যন্ত নিয়মিত অটো চলে। ভাড়া জনপ্রতি ১০-১৫ টাকা। বড়বাজার হতে রিক্সা যোগে যাওয়া যায়। ভাড়া ২৫-৩০ টাকা। যাওয়া আসার রাস্তায় পড়বে রবি ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত “টেগর লজ” ও অবিভক্ত ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় কাপড়কল “মোহিনী মিল”। লালন মাজারে আসা বা যাওয়ার পথে ঐতিহাসিক স্থানদুটি দেখে নিতে পারেন।

আরও পড়ুন
ফকির লালন শাহ

Scroll to Top