জলধর সেন
রায় বাহাদুর জলধর সেন Jaladhar Sen (১৩ মার্চ ১৮৬০ – ১৫ মার্চ ১৯৩৯) ভ্রমণ কাহিনী, রম্য রচনা, উপন্যাস লেখক ও পত্রিকা সম্পাদক। তৎকালীন নদিয় জেলার কুমারখালীতে (বর্তমান কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলায়) তিনি বসবাস করতেন।
Table of Contents
জন্ম পরিচয়
সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ভ্রমণ কাহিনি লেখক, রম্যরচিয়তা ও উপন্যাসিক রায় বাহাদুর জলধর সেন ১৮৬০ সালের ১৩ মার্চ কুষ্টিয়ার কুমারখালী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল হলধর সেন। তাদের আদি নিবাস পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার বারাসাতের নিকট দেগঙ্গা। তার প্রপিতামহ কুমারখালী ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানীর রেশম কুটিরে দেওয়ানীর কাজ নিয়ে কুমারখালী আসেন এবং সেখানেই আবাস গড়ে তোলেন।
শিক্ষা
জলধর সেন ১৮৭৮ সালে কুমারখালীএম এন হাইস্কুল থেকে ইন্ট্রান্স পাস করেন। তারপর কলকাতার জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। প্রতিযোগীতামূলক এল এ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন শেষ হয়।
কর্ম জীবন
পদ্মা ঘাটের গোয়ালন্দ স্কুলে শিক্ষাকতার মাধ্যমে জলধর সেনের কর্মজীবন শুরু হয়। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে স্ত্রী, কণ্যা ও মাতার মৃত্যুতে তিনি মানুষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন। এরপর শিক্ষকতা ছেড়ে মানসিক প্রশান্তির জন্য হিমালয় পর্বতমালায় তীর্থ যাত্রায় বের হন। হিমালয় থেকে ফিরে ১৮৯১ সালে দেরাদুন ও মহিষাদল রাজ স্কুলে শিক্ষকতায় যুক্ত হন। ১৮৯৯ সালে শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে কলকাতায় চলে আসেন।
কলিকাতায় এসে সাংবাদিকতা শুরু করেন। ‘বঙ্গবাসী’, ‘হিতবাদী’ ও ‘সুলভ সমাচার’ পত্রিকায় সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করে ১৯১৩ সালে যোগদেন মাসিক ‘ভারতবর্ষ’ নামক বিখ্যাত পত্রিকায়। মাঝে ১৯০৯ সাল হতে ১৯১১ সাল পর্যন্ত সন্তোষের জমিদার বাড়ীতে দেওয়ান হিসাবে কাজ করেন। গ্রামীন সাংবাদিকতার প্রথিকৃত কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদারের গ্রামবার্তা প্রকাশিকা সম্পাদনার সাথেও যুক্ত ছিলেন।
জলধর সেনের সাহিত্যকর্ম
গ্রামীন সাংবাদিকতার প্রথিকৃত কাঙ্গাল হরিনাথ ছিলেন জলধরের শিক্ষক। কাঙ্গাল হরিনাথের অনুপ্রেরণাতেই তিনি সাহিত্য সাধনা শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করেছেন। ভ্রমণ কাহিনী, গল্প, উপন্যাস, জীবনী গ্রন্থ রচনার পাশাপাশি পাঠ্যপুস্তক লিখেছেন, বই সম্পাদনা করেছেন। তীর্থ যাত্রায় হিমালয় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি রচনা করেন ভ্রমণ কাহিনী ‘হিমালয় বক্ষে’ যা সে যুগে ব্যপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
তার লিখিত সবগুলি বই সহজ ও চিত্তাকর্ষক ভাষায় রচিত হয়েছিল। সুখ-দুঃখ, প্রেম-বিরহের এক অনুপম চিত্র জলধর সেনের লেখায় ফুটে উঠে। ১৯২৯ সালে সাহিত্য কর্মে অসামান্য অবদানের জন্য ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘রায় বাহাদুর’ উপাধিতে ভূষিত করে।
১৯৩২ সালে কলকাতায় রামমোহন লাইব্রেরী মিলনায়তনে বঙ্গবাসীর পক্ষ থেকে জলধর সেনকে বিপুল সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ও মানপত্র প্রদান করেন অপরাজেয় কাথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়। জলধর তৎকালীন সাহিত্যিক সমাজে বিশেষভাবে জনপ্রিয় ছিলেন।
ভ্রমণবিষয়ক লেখা
প্রবাসচিত্র
হিমালয়
হিমালয় প্রথিক
হিমাচল-বক্ষে
হিমাদ্রি
দশদিন
মুসাফির মঞ্জিল
দক্ষিণাপথ
মধ্যভারত
আমার য়ুরোপ ভ্রমণ (অনুবাদ গ্রন্থ)
গল্প
নৈবেদ্য
কাঙ্গালের ঠাকুর
বড় মানুষ
ছোটকাকী ও অন্যান্য গল্প
নূতন গিন্নী ও অন্যান্য গল্প
পুরাতন পঞ্জিকা
আমার বর ও অন্যান্য গল্প
পরাণ মন্ডল ও অন্যান্য গল্প
আশির্ব্বাদ
এক পেয়ালা চা
মায়ের নাম
উপন্যাস
দুঃখিনী
বিশুদাদা
করিম সেখ
আলাল কোয়াটারমেন (অনুবাদ)
অভাগী (১ম, ২য় ও ৩য় খন্ড)
বড়বাড়ী
ইরিশ ভান্ডারী
ঈশানী
পাগল
চোখের জল
ষোল-আনি
সোনার বাংলা
দানপত্র
পরশপাথর
ভবিতব্য
তিনপুরুষ
উৎস
চাহার
দরবেশ (অনুবাদিত)
শিশুপাঠ্য গ্রন্থ
সীতাদেবী
কিশোর
শিব সীমন্তিনী
মায়ের পূজা
আফ্রিকায় সিংহ শিকার
রামচন্দ্র
আইসক্রিম সন্দেশ
পাঠ্য পুস্তক
বাঙলা দ্বিতীয় পাঠ
প্রথম শিক্ষা
শিশুবোধ
নবীন ইতিহাস
বঙ্গ গৌরব
সম্পাদিত গ্রন্থ
হরিনাথ গ্রন্থাবলী
জাতীয় উচ্ছ্বাস
প্রথমনাথের কাব্যগ্রন্থাবলী
জীবনী গ্রন্থ
কাঙ্গাল হরিনাথ
সম্পাদিত পত্রিকা
বঙ্গবাসী
বসুমতী
সন্ধ্যা
হিতবাদী
সুলভ সমাচার
ভারতবর্ষ
গ্রামবার্তা প্রকাশিকা
আত্নজীবনী
জলধর সেনের আত্নজীবনী
১৯৩৯ সালে কলকাতায় এই গুণী সাহিত্যিকের মৃত্যু হয়।
জলধর সেনের বই ডাউনলোড করুন
ডাউনলোড লিংক