গগন হরকরা
“আমি কোথায় পাব তারে,
আমার মনের মানুষ যে রে”
গগন হরকরা এর এই গানটির সুর অনুকরণে বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর
‘আমার সোনার বাংলা
আমি তোমায় ভালো বাসি’
গানটির সুর দেন যা পরবর্তিতে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত করা হয়।
বিশিষ্ট গীতিকার ও লোকসঙ্গীত শিল্পী গগন চন্দ্র দাস বা গগন হরকরা আনুমানিক ১৮৪৫ খ্রিঃ কবিগুরুর স্মৃতি বিজড়ীত শিলাইদহের নিকটবর্তী কসবা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
গগণ মূলত কৃষি কাজ করলেও পাশা পাশি তৎকালীন শিলাইদহ ডাকঘরের চিঠি বিতরণের কাজ করতেন। তৎকালে চিঠি বিতরণের দায়িত্বে নিয়োজিতদের ‘ডাক হরকরা’বা হরকরা বলে ডাকা হত। সেই থেকে গগন চন্দ্র দাসের নাম গগন হরকরা হিসাবে পরিচিত হয়।
গগন চিঠি বিলির ফাকে নিজের লেখা ও সুরকরা গান গাইতেন। তিনি বাউল ফকির লালন শাহ এর ভক্ত ছিলেন বলে জানা যায়। নিজের লেখা গানের পাশা পাশি লালনের গানও গাইতেন। লালনও গগনের গান ও গগনের সান্যিধ্য পছন্দ করতেন। শিলাইদহের ঠাকুর বাড়ীতে চিঠি বিলি করতে গিয়ে বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাঠ ঠাকুরের সাথে দেখা ও আলাপ হয়। রবিঠাকুর গগনের কাছে গগনের ও লালনের গান শুনতেন।
রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর গগন হরকরার জীবন থেকে প্রভাবিত হয়ে ডাকঘর নাটকটি লিখেছিলেন। নাটকের গগেন্দ্রনাথ ঠাকুর চরিত্রটি তা প্রমাণ করে।
গুণী এই গীতিকার, সুরকার ও বাউল শিল্পীর স্মৃতি কালের পরিক্রমায় হারিয়ে গেছে। শিলাইদহের কসবা গ্রামে তার কোন স্মৃতিচিহ্ন নাই। শিলাইদহ ঠাকুর পরিবারের কাচারি বাড়ীর সন্নিকটে অবস্থিত ঐতিহাসিক ডাকঘরটির কোন চিহ্নও নাই।
তথ্যঋণঃ ইউকিপিডিয়া